শাল্লার খবর ডেস্ক ::: সিলেটে কলেজ ছাত্রী সোনিয়া বেগম (২০) হত্যার মামলার একমাত্র আসামি মো. সজিব আহমদকে (২৫) গ্রেপ্তার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)-৯। সজিব নিহত সোনিয়ার মামাতো ভাই।
মঙ্গলবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলন করে সজিবকে গ্রেপ্তারের তথ্য জানান র্যাব-৯ এর অধিনায়ক উইং কমান্ডার মো. মোমিনুল হক। একই দিনে সোনিয়া হত্যার ঘটনায় থানায় মামালও করা হয়েছে।
সোমবার রাত পৌনে ৯র দিকে ঢাকার সায়েদাবাদ বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে সজিবকে গ্রেপ্তার করে। তিনি হবিগঞ্জ জেলার আজমেরীগঞ্জ উপজেলার শরীফনগর গ্রামের মো. নুরুদ্দিনের ছেলে।
এরআগে রবিবার দুপুরে সিলেট নগরের শেখঘাট খুলিয়াটুলা আবাসিক এলাকার নীলিমা-১৪ নম্বর বাসা থেকে সোনিয়ার গলাকাটা লাশ উদ্ধার করা হয়। তিনি সিলেটের জকিগঞ্জ উপজেলার কলাছড়া গ্রামের বিল্লাল আহমদের মেয়ে ও দক্ষিণ সুরমার নুরজাহান মেমোরিয়াল মহিলা ডিগ্রি কলেজের ছাত্রী। তিনি মা ও সৎ বাবার সঙ্গে ওই বাসার ৪র্থ তলায় থাকতেন। সোনিয়া সিলেটের আঞ্চলিক ভাষার নাটকে অভিনয় করতেন।
পারিবার ও পুলিশ সূত্র জানায়, হত্যাকাণ্ডের আগের রাতে সোনিয়াদের বাসায় রাত্রিযাপন করে তার মামাতো ভাই সজিব আহমদ। রবিবার সকালে সনিয়া পরিবারের সদস্যদের সাথে নাস্তা করেন। এরপর পরিবারের অন্য সদস্যরা সোনিয়ার সৎ বাবা সেলিম মিয়াকে দেখতে হাসপাতালে চলে যান। এর কিছুক্ষণ পর সজিবও বাসা থেকে বের হয়ে যান।
দুপুর ১২টার দিকে সাড়াশব্দ না পেয়ে সোনিয়ার ভাবি তাকে ডাকতে যান। এসময় রুমে ঢুকে তিনি সনিয়ার গলাকাটা লাশ বিছানায় পড়ে থাকতে দেখেন। পরে পুলিশ গিয়ে লাশ উদ্ধার করে এবং রুমের ভেতর থেকে কাপড় কাটার একটি রক্তমাখা কাঁচি জব্দ করে।
সোনিয়ার পরিবারের প্রথম থেকেই দাবি করে আসছে- এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সজিব জড়িত। পুলিশের সন্দেহেও ছিলেন সজিব। ঘটনার পর থেকে সজিব গা ঢাকা দেন।
মঙ্গলবার দুপুরেই নিহত সোনিয়ার বড় ভাই পারভেজ আহমদ বাদী হয়ে সজিবকে প্রধান আসামী করে কতোয়ালি থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
এদিকে, চাঞ্চল্যকর এ হত্যাকাণ্ডের পর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বিভিন্ন বাহিনীর পাশাপাশি র্যাব-৯-ও ছায়া তদন্ত শুরু করে। এক পর্যায়ে সোমবার রাত পৌনে ৯টার দিকে ঢাকার যাত্রাবাড়ি থানাধীন সায়েদাবাদ বাসস্ট্যান্ড এলাকায় বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে তাকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়।
র্যাব-৯ এর অধিনায়ক মোমিনুল হক প্রেস ব্রিফিংকালে জানান- প্রায় সনিয়াদের বাসায় আসতেন সজিব। তিনি তার গর্ভবতী স্ত্রীর চিকিৎসার কথা বলে গত ৭ দিন যাবৎ সোনিয়াদের বাসায় অবস্থান করেছিলেন। ঘটনার আগের দিন (১১ ফেব্রুয়ারি) সোনিয়া চাকরির সন্ধানে সজিবকে নিয়ে বিয়ানীবাজার যান। ঘটনার দিন সকালে সোনিয়ার সৎ বাবা অসুস্থ থাকায় পরিবারের সদস্যরা হাসপাতালে নিয়ে যায়। পরে হাসপাতাল হতে সোনিয়ার মা দুপুর ১২ টার দিকে বাসায় ফিরে সোনিয়াকে দেখতে না পেয়ে তার শয়নকক্ষে ঢুকে রক্তাক্ত লাশ পড়ে থাকতে দেখেন।
খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে। সোনিয়ার মরদেহের গলার বাম পাশে কাটা এবং ডান হাতের কব্জির রগ কাটা পাওয়া যায়। পুলিশ এসময় তল্লাশি করে ঘটনাস্থলের খাটের তোষকের নিচ থেকে ধারালো রক্তমাখা একটি কাঁচি উদ্ধার করে।
র্যাব আরও জানায়- সজিবের নামে ঢাকার ভাষানটেক থানায় মামলা রয়েছে। মুক্তিপণ আদায়ের উদ্দেশ্যে নেশাজাতীয় দ্রব্য খাইয়ে শিশু অপহরণ ও সহায়তার অভিযোগে এ মামলা দায়ের করা হয়েছিলো। এ মামলায় তিনি গ্রেপ্তারের পর জেলও খেটেছেন।