শাল্লার খবর ডেস্ক ::: সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরের নলুয়া হাওরের ফসল রক্ষায় গত বছর এক সপ্তাহ লড়াই করে একটি বেড়িবাঁধ রক্ষা করেছিলেন স্থানীয় এলাকাবাসী। কিন্তু সেই বাঁধের ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে এবার এখনো কাজ শুরু হয়নি। ফলে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা দেখা দিয়েছে স্থানীয়দের মধ্যে।
বুধবার (৮ ফেব্রুয়ারি) সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, জগন্নাথপুর ও দিরাই উপজেলার সীমান্ত দিয়ে বয়ে যাওয়া কামারখালী নদীর তীরে অবস্থিত হামহামির বেড়িবাঁধের একাংশে কাজ শুরু হয়েছে। তবে বাঁধের ভাঙা গর্তে এক দলা মাটিও পড়েনি। এই স্থানটি সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ। গেলবার এ স্থানে বারবার ফাটল দেখা দিয়েছিল।
এলাকাবাসী জানায়, গত বছরের ৪ এপ্রিল নলুয়া হাওরের পোল্ডার-১-এর চার নম্বর প্রকল্পের ভুরাখালী গ্রামের নিকটবর্তী হামহামি বাঁধে ফাটল দেখা দেয়। তাৎক্ষণিকভাবে স্বেচ্ছাশ্রমে কাজ করে বাঁধটি কোনোভাবে রক্ষার চেষ্টা করেন এলাকাবাসী। এখানে শেষ নয়। পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মারাত্মক হুমকির মুখে পড়ে বাঁধটি। একাধিকবার বাঁধে ধসের ঘটনা ঘটে। ক্ষতিগ্রস্ত স্থানে ও বিকল্প আরেকটি বাঁধ নির্মাণের ফলে এক সপ্তাহ প্রশাসনের নজরদারির পাশাপাশি কৃষকরা কাজ করে বাঁধটি রক্ষা করেছিলেন। তখন হাওরের বুকে আধা-কাঁচা বোরো ধান ছিল। কষ্টার্জিত ফসলডুবির শঙ্কায় চোখে ঘুম ছিল না কৃষক পরিবারের লোকজনের। এবার ওই বাঁধে প্রায় দুই মাস পার হলেও এখনো কাজ ধরা হয়নি। যে কারণে কাজ নিয়ে শঙ্কায় ভুগছিলেন কৃষকরা।
স্থানীয় কৃষক সাইদুর রহমান জানান, গতবার দিনরাত একাকার করে হাওরের মানুষ ধসে যাওয়া বেড়িবাঁধে স্বেচ্ছাশ্রমে কাজ করেছেন। সেই ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে আজও কাজ শুরু হয়নি। বাঁধের কাজ নিয়ে তাঁরা শঙ্কিত।
হাওর বাঁচাও আন্দোলনের জগন্নাথপুর উপজেলা কমিটির আহ্বায়ক সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘হাওরে ধীরগতিতে কাজ চলছে। এর মধ্যে গত বছরের বেশির ভাগ ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধে এবার এখন পর্যন্ত কাজ শুরু না হওয়ায় আমরা হতাশ হয়েছি।’ দ্রুত নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সঠিকভাবে কাজ শেষ করার জন্য তিনি আহবান জানান।
চার নম্বর প্রকল্পের সভাপতি রনধীর কান্ত দাস নান্টু বলেন, ‘প্রকল্পের কাজ চলমান। ভাঙা অংশে হাওরের কৃষিজমিতে পানি সেচের জন্য কাজ করা হয়নি। জমিতে কৃষি সেচ শেষ হলেই কাজ শুরু হবে। আশা করছি, এক-দুই দিনের মধ্যে কাজ ধরতে পারব। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বাঁধের কাজ শেষ করা সম্ভব।’
পানি উন্নয়ন বোর্ডের সহকারী প্রকৌশলী হাসান গাজী জানান, জগন্নাথপুর উপজেলায় এবার ২৪ কিলোমিটার এলাকায় ৪৭টি কমিটির (পিআইসি) মাধ্যমে ৪৫টি প্রকল্পে কাজ শুরু হয়েছে। অন্য দুটি প্রকল্পে দ্রুত কাজ শুরু হবে। এসব প্রকল্পের কাজের জন্য বরাদ্দ পাওয়া গেছে ১০ কোটি টাকা।