• ১৯শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ৪ঠা অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ১৭ই জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

দিরাইয়ে আ. লীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষে আহত ব্যক্তির মৃত্যু

Dainik Shallar Khabor.com
প্রকাশিত নভেম্বর ১৪, ২০২২
দিরাইয়ে আ. লীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষে আহত ব্যক্তির মৃত্যু

সুনামগঞ্জের দিরাইয়ের কেন্দ্রীয় নেতাদের উপস্থিতিতে আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষের ঘটনায় এক জন নিহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।

নিহত আজমল হোসেন চৌধুরী কুলঞ্জ গ্রামের আব্দুল হান্নানের ছেলে। সোমবার (১৪ নভেম্বর) দুপুরে উপজেলা সদরের বিএডিসি মাঠে অনুষ্ঠিত উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে উভয়পক্ষের অন্তত ২০ জন আহত হন।

আজমল হোসেন চৌধুরীর ভাগ্নে রহমত আলী বলেন, ‘আমি ও মামা একসাথে সম্মেলনে ছিলাম। আমার ও মামার উপর দুটি ইটের ঢিল এসে পড়লে মামা পিঠে আঘাত পান। তাৎক্ষণিক তার আঘাতস্থলে বরফ লাগিয়ে হাসপাতালে নিয়ে যাই। সেখানে গেলে তার অবস্থার অবনতি হয়। এক পর্যায়ে মারা যান মামা’।

দলীয় সূত্র জানায়, সোমবার দুপুরে দিরাই উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে মঞ্চে উঠা নিয়ে সভায় সাবেক পৌর মেয়র মোশারফ মিয়া ও প্রদীপ রায়ের সমর্থকদের মধ্যে এ সংঘর্ষ হয়। এ সময় উভয় পক্ষ এক অপরকে লক্ষ করে ইটপাটকেল ও চেয়ার ছুড়ে। দিরাই পৌরসভার সাবেক মেয়র মোশাররফ মিয়ার সমর্থকদের মঞ্চে উঠতে না দেওয়ায় সভা শুরুর পর পর সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়েছে বলে জানান প্রত্যক্ষদর্শীরা।

এ সময় সম্মেলনে আগত অতিথি জেলা আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক কামরুল হাসান, জেলা যুবলীগের যুগ্ন আহবায়ক আসাদুজ্জামান সেন্টু, জেলা মুক্তিযোদ্ধা যুব কমান্ড সভাপতি কুবাদ আলী, দিরাই উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, দিরাই পৌরসভার সাবেক মেয়র মোশাররফ মিয়া, দিরাই পৌর কাউন্সিলর মাছুম প্রদীপ, পুলিশ, জনপ্রতিনিধি সহ আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের অন্তত অর্ধশত আহত হয়েছেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সংঘর্ষের সময় আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য নূরুল ইসলাম নাহিদ, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আজিজুল সামাদ আজাদ ডন, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মতিউর রহমান, সহ-সভাপতি নোমন বখত পলিন, সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার এম এনামুল কবির ইমন, স্থানীয় সংসদ সদস্য ড. জয়া সেনগুপ্ত, সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট শামীমা আক্তার খানম-সহ কেন্দ্রীয় ও জেলার নেতারা মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন। তারা চেয়ারকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে আত্মরক্ষা করেন।

পরে পুলিশ ও কেন্দ্রীয় নেতাদের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। সংঘর্ষের একঘণ্টা পর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে ফের সম্মেলন শুরু হয়।

দিরাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাইফুল আলম বলেন, বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। সংঘর্ষের ঘটনায় কয়েকজন আহত হয়েছেন।

এদিকে, উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা ও সাবেক পৌর মেয়র মোশাররফ মিয়া দাবি করেছেন, ‘নিহত আজমল হোসেন চৌধুরী তার কর্মী। সংঘর্ষের সময় তার সামনে প্রতিপক্ষের ইটের আঘাতে আহত হয়ে হাসপাতালে যাওয়ার পর আজমলের মৃত্যু হয়েছে’।

তবে অপরপক্ষ এটাকে ‘স্বাভাবিক মৃত্যু’ বলে দাবি করছে।

অন্তত আধা ঘণ্টা চলে দুপক্ষের সংঘর্ষ। পুলিশ পরিবেশ শান্ত করলে ঘন্টা খানেক পরে শুরু হয় আওয়ামী লীগের সম্মেলন ।

উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ সভাপতি এডভোকেট সোহেল আহমেদের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ রায়ের পরিচালনায় সম্মেলনে প্রধান অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতি মন্ডলীর সদস্য, সাবেক মন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। বিশেষ অতিথি কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আহমেদ হোসেন, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আজিজুস সামাদ ডন, সংসদ সদস্য মহিবুর রহমান মানিক , শামীমা খানম। সম্মেলন উদ্বোধন করেন জেলা সভাপতি আলহাজ্ব মতিউর রহমান। প্রধান আলোচক ছিলেন জেলা সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার এনামুল কবির ইমন ।

প্রধান অতিথি নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, যারাই আজকের সম্মেলনে ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটিয়েছে তাদের রেহাই নেই। তিনি শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি সহ সরকারের উন্নয়নের ফিরিস্তি তুলে বলেন, বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ আজ উন্নয়নশীল দেশে পরিনত হয়েছে। স্বাধীনতা সংগ্রাম থেকে শুরু করে দেশের প্রতিটি প্রগতিশীল আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছে আওয়ামী লীগ। সুতরাং আওয়ামী হচ্ছে জনগণের দল।