• ১৭ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ , ২রা পৌষ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ২৬শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি

সুনামগঞ্জ-৩: প্রচারণায় সরব প্রার্থীরা, বিলবোর্ড-ফ্যাস্টুনের ছড়াছড়ি

Dainik Shallar Khabor.com
প্রকাশিত ডিসেম্বর ২, ২০২৫
সুনামগঞ্জ-৩: প্রচারণায় সরব প্রার্থীরা, বিলবোর্ড-ফ্যাস্টুনের ছড়াছড়ি

জগন্নাথপুর ও শান্তিগঞ্জ উপজেলা নিয়ে গঠিত সুনামগঞ্জ-৩ নির্বাচনী আসন। প্রায় ৩ লক্ষ ৬৫ হাজার ভোটারের এ আসনে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, জমিয়ত উলামায়ে ইসলাম, খেলাফত মজলিস, এনসিপি ও স্বতন্ত্র প্রার্থীসহ ৯ রাজনীতিবিদ সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী হয়ে প্রচারণা চালাচ্ছেন।

বিএনপি থেকে মনোনীত, যুক্তরাজ্য বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কয়ছর এম আহমদ নির্বাচনী এলাকার বিভিন্ন জায়গায় সভা-সমাবেশ, উঠান বৈঠক করে যাচ্ছেন। বিভিন্ন ঘনবসতি এলাকায় শোভা পাচ্ছে তাঁর নির্বাচনী বিলবোর্ড ও ফ্যাস্টুন। বাজারে বাজারে হেঁটে ভোটারদের হাতে তুলে দিচ্ছেন লিফলেট। কর্মীরাও যাচ্ছেন ভোটারদের দ্বারে দ্বারে।

জামায়াত মনোনীত প্রার্থী এড. ইয়াছিন খানের ফ্যাস্টুন, বিলবোর্ডও দেখা যাচ্ছে নির্বাচনী এলাকার গুরুত্বপূর্ণ জায়গায়। তিনিও ঘুরে বেরাচ্ছেন নির্বাচনী এলাকার প্রতিটি গ্রামে গ্রামে।

বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের কেন্দ্রিয় নায়েবে আমির এড. মাও. শাহীনূর পাশা চৌধুরীও তাঁর পুরোনো অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। দিন, সন্ধ্যা-রাতে তিনিও যাচ্ছেন ভোটারদের দরজায়। জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের প্রচার সম্পাদক সৈয়দ তালহা আলম দল থেকে মনোনয়ন না পেলেও প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। বলছেন, স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নেবেন তিনি। জগন্নাথপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ইতোমধ্যে দু’বার অংশ নিয়ে বেশ সাড়া ফেলেছিলেন তিনি। ব্যানার, ফ্যাস্টুন, উঠান বৈঠক ও গণসংযোগে মাঠে সক্রিয় ভূমিকায় আছেন তালহা।

দল থেকে মনোনয়ন বঞ্চিত হয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করার ঘোষণা দিয়েছেন শান্তিগঞ্জ উপজেলার জয়কলস ইউনিয়নের উজানীগাঁও গ্রামের বাসিন্দা, সুনামগঞ্জ জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি ব্যারিষ্টার আনোয়ার হোসেন। তিনিও গ্রামে গ্রামে ঘুরে করছেন গণসংযোগ। দুই উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় শোভা পাচ্ছে তাঁর নির্বাচনী বিলবোর্ড, ফ্যাস্টুন ও ব্যানার।

এছাড়াও এ আসনে নির্বাচন করার ঘোষণা দিয়েছেন খেলাফত মজলিসের অপরাংশের নেতা (যুক্তরাজ্য প্রবাসী) হাফিজ মুশতাক আহমদ (ঘড়ি)।

এদিকে, এনসিপি থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশী হয়েছেন দু’জন। যুক্তরাজ্য প্রবাসী ও পশ্চিম পাগলা ইউনিয়নের কাদিপুর গ্রামের বাসিন্দা মাসুদুর রহমান মাসুদ ও জগন্নাথপুর উপজেলার কাতিয়ার শেখ সাহেবের ছেলে ইসহাক আমিনী। মাসুদ সুনামগঞ্জ-৩ ও সিলেট-১ আসনের মনোনয়ন প্রত্যাশী হয়েছেন। গণঅধিকার পরিষদের প্রার্থী হিসেবে শান্তিগঞ্জের পূর্ব বীরগাঁও ইউনিয়নের ধরমপুর গ্রামের মালয়েশিয়া প্রবাসী পারভেজ আহমদের নামও শুনা যাচ্ছে। তবে মুশতাক আহমদ, মাসুদুর রহমাম মাসুদ, ইসহাক আমিনী ও পারভেজ আহমদের নাম প্রার্থী হিসেবে শুনা গেলেও তেমন কোনো প্রচারণায় তাদেরকে দেখা যাচ্ছে না৷ নির্বাচনী এলাকায় খুব একটা পরিচিত মুখও নন তারা।

ব্যারিষ্টার আনোয়ার হোসেন সম্প্রতি দলের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে নির্বাচন করার ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, এই আসনে মানুষ তার পছন্দের প্রার্থী পাননি। শান্তিগঞ্জের মানুষের মনের কথা ছিলো একজন শিক্ষিত ও যোগ্য মানুষকে প্রার্থী করা হোক। এই আসন একটি ভিআইপি আসন। এখানে যোগ্য মানুষ দরকার। আমার উপজেলাসহ জগন্নাথপুর উপজেলার মানুষ আমার সাথে আছেন।

সৈয়দ তালহা আলম বলেন, জগন্নাথপুরের মানুষ আমাকে আগে থেকেই ভালোবাসেন। এই ভালোবাসা আল্লাহর রহমতে এখনো বহাল আছে। নির্বাচনে মানুষ সেই ভালোবাসার প্রকাশ ঘটাবেন ইনশাআল্লাহ। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে মানুষের পাশেই যাচ্ছি সব সময়। জয়ের ব্যপারে আমি শতভাগ আশাবাদী।

এড. শাহীনুর পাশা চৌধুরী বলেন, ১৯৯৬ ও ২০০১ সালে আবদুস সামাদ আজাদের সাথে নির্বাচন করেছি। আরও ৪টি নির্বাচনের অভিজ্ঞতা আমার ঝুঁলিতে আছে। এই অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে নির্বাচনে কাজ করছি। রিক্সা প্রতীকে সাধারণ মানুষ এই নির্বাচনে আমাকে আরেকবার সুযোগ দিবেন বলে আমি বিশ্বাস করি। অন্যান্য নির্বাচনের চেয়ে এ নির্বাচন আমার কাছে বেশ প্রফুল্ল মনে হচ্ছে। আমার ব্যক্তি ইমেজ আছে। আমি আশাবাদী মানুষ আমাকেই বেচে নেবেন।

এড. ইয়াছিন খান বলেন, মানুষ বিগত দিনগুলোকে বিএনপি-আওয়ামীলীগকে দেখেছেন। এখন পরিবর্তন চান। আমরা মানুষের কাছে যাচ্ছি, তারা আমাদেরকে এই বার্তা দিচ্ছেন। বিশেষ কোনো শ্রেণি নয়, সব শ্রেণির ভোটাররাই আমাদের ভোট দেবেন। বিলবোর্ড, ফ্যাস্টুন ছাড়াও আমরা উঠান বৈঠকও করছি। দ্বারে দ্বারে যাচ্ছি। আমরা খুবই আশাবাদী।

অভিযোগ করে তিনি বলেন, আমার অনেক বিলবোর্ড অন্য প্রার্থীর লোকজন ছিঁড়ে ফেলছেন। শান্তিগঞ্জের পূর্ব পাগলা ইউনিয়নের মনবেগ পয়েন্টে আমার বিলবোর্ড ছিঁড়ে অন্য প্রার্থীর লোকজন নিজের পছন্দের প্রার্থীর বিলবোর্ড টানিয়েছেন। জনগণ ভোটের মাধ্যমে এর জবাব দেবেন ইনশাআল্লাহ।

ধানের শীষের প্রার্থী কয়ছর এম আহমদ বলেছেন, অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে আমাকে গ্রহণ করেছেন। আমি মানুষের কাছে যাচ্ছি। আগের স্বৈরাচারী সরকার সাধারণ মানুষের কাছে যেতো না বলেই তারা জনগণকে মূল্যায়ণ করতো না। মানুষের সাথে আমাদের একটা কমিটমেন্ট আছে। মানুষের মন জয়ে কাজ করে যাচ্ছি। মানুষও সাড়া দিচ্ছেন। আমরা জয়ের ব্যপারে শতভাগ আশাবাদী। সব বয়সী ভোটার আমাদের সাথে আছেন।