• ১৭ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ , ২রা পৌষ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ২৬শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি

দক্ষিণ সুরমায় ডাকাতির ঘটনায় গ্রেপ্তার রিহাদ ‘বিএনপির কর্মী’, ছিলেন কাউন্সিলর প্রার্থীও

Dainik Shallar Khabor.com
প্রকাশিত ডিসেম্বর ২, ২০২৫
দক্ষিণ সুরমায় ডাকাতির ঘটনায় গ্রেপ্তার রিহাদ ‘বিএনপির কর্মী’, ছিলেন কাউন্সিলর প্রার্থীও

সিলেট-ফেঞ্চুগঞ্জ সড়কে ডাকাতির ঘটনায় গ্রেপ্তার হওয়া রিহাদ আহমদ (৩৭) বিএনপির রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত। গত সিটি করপোরেশন নির্বাচনে তিনি কাউন্সিলর প্রার্থীও ছিলেন। রিহাদ যুক্তরাজ্য প্রবাসী বলেও জানা গেছে।

ডাকাতির ঘটনায় মঙ্গলবার ভোরে রিহাদকে গ্রেপ্তার করে মোগলাবাজার থানা পুলিশ। গ্রেপ্তার অন্য দুজনের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে রিয়াদকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে জানিয়েছে পুলিশ।

রিহাদ আহমদ সিলেট সিটি করপোরেশনের ৪২ নং ওয়ার্ডের সুলতানপুর এলাকা মৃত আব্দুল মজিদের ছেলে।

রিহাদকে গ্রেপ্তারের পর সিলেট জেলা ও মহানগর বিএনপির শীর্ষ নেতাদের ঘনিষ্ট ছবি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। এসব ছবিতে বিএনপির বিভিন্ন অনুষ্টানেও রিহাদকে অংশ নিতে দেখা গেছে। এছাড়া নিজের ফেসবুক একাউন্টেও বিএনপি সংশ্লিস্ট অনেক ছবি ও পোস্ট শেয়ার করেছেন রিহাদ।

সিলেট মহানগর ও মোগলাবাজার থানা বিএনপির একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে, রিহাদ আহমদ বিএনপির সাথে সম্পৃক্ত। তবে তিনি গত বছরের ৫ আগস্টের ৫ আগস্টের পর বিএনপিতে সক্রিয় হন। এরআগে বিএনপির কর্মসূচীতে তাকে কখনো দেখা যায়নি। এছাড়া দলের কোন পর্যায়ে তার কোন পদ নেই।

স্থানীয় বিএনপির এক নেতা জানান, ২০২৩ সালে অনুষ্ঠিত সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ৪২ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী হন রিহাদ। তখনও দলের সাথে তার কোন সম্পৃক্ততা ছিলো না। থাকলে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার কারণে বিএনপি থেকে নিশ্চয়ই তাকে বহিস্কার করা হতো।

মহানগর বিএনপির আরেক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, নির্বাচনে অংশ নেওয়ার আগে যুক্তরাজ্য থেকে আসেন রিহাদ। চালচলনে তাকে বেশ অবস্থাশালী মনে হয়েছে।

ডাকাতির ঘটনায় রিয়াদের সম্পক্ততা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করে এই নেতা বলেন, তাকে ফাঁসানোও হতে পারে।

গত সোমবার রাত ৩ টার দিকে মোগলাবাজার থানাধীন লালমাটিয়া, রয়েল সিটি আবাসিক এলাকা সংলগ্ন সিলেট–ফেঞ্চুগঞ্জ সড়কে স্টেডফাস্ট কুরিয়ার সার্ভিস লিমিটেড-এর একটি কাভার্ড ভ্যানে ডাকাতির ঘটনা ঘটে। ডাকাতরা একটি সাদা নোহা গাড়ি দিয়ে কাভার্ড ভ্যান ব্যারিকেড দেয়। নোহা ও একটি সাদা প্রাইভেট কার হতে ৬/৭ জন সশস্ত্র ডাকাত দল স্টেডফাস্ট কুরিয়ার সার্ভিস লিমিটেড-এর চালক ও হেলপারকে মারধর করে কনটেইনার খুলে প্রায় ২০ লাখ টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। এসময় তারা গাড়ির হেলপারদের কাছ থেকে ২টি মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয়।

পুলিশ জানায়, ডাকাতির ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণের মাধ্যমে পুলিশ দক্ষিণ সুরমার পশ্চিমভাগ আবাসিক এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে অভিযুক্ত সাকেল আহমদ (৩৩) কে তার শশুর বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।

সাকেলের তথ্য মোতাবেক ওই রাতেই পূর্ব শ্রীরামপুর এলাকা থেকে আক্তার হোসেন (৩৪) এবং সুলতানপুর এলাকা থেকে রিহাদ আহমেদ (৩৭) গ্রেপ্তার করা হয়।

সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ কমিশনার (গণমাধ্যম) মোহাম্মদ সাইফুল হাসান জানান, গ্রেপ্তারকৃত তিনজনেই উপস্থিত লোকজনের সামনে ডাকাতির ঘটনাটি স্বীকার করে। পরবর্তীতে মঙ্গলবার ভোরে আসামিদের দেওয়া তথ্য মতে, আটক রিহাদ আহমেদের বাড়ির বাউন্ডারি ভেতরে কচুর ঝোপের ভিতরে লুকানো ৩টি সাদা প্লাস্টিকের বস্তা ও ২টি কালো পলিথিনের বস্তা এবং ২টি খাকি রঙের কার্টুনে থাকা ডাকতির মালামাল উদ্ধার করা হয়।

তিনি জানান, আসামিরা স্বীকার করেছে, তারা একটি সংঘবদ্ধ ডাকাত দলের সদস্য এবং সিলেট মহানগর ও জেলার বিভিন্ন এলাকায় নিয়মিত ডাকাতি করে আসছিল।

রিহাদের ব্যাপারে মহানগর বিএনপির সভাপতি রেজাউল হাসান কয়েস লোদীর সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।