• ১৬ই জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ , ১লা শ্রাবণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ২১শে মহর্‌রম, ১৪৪৭ হিজরি

বাগবাড়িতে আ’লীগ নেতার নেতৃত্বে বিএনপি নেতার বাসা ভাঙচুর-লুটপাটের অভিযোগ

Dainik Shallar Khabor.com
প্রকাশিত জুলাই ৫, ২০২৫
বাগবাড়িতে আ’লীগ নেতার নেতৃত্বে বিএনপি নেতার বাসা ভাঙচুর-লুটপাটের অভিযোগ

শাল্লার খবর ডেস্ক ::: সিলেট নগরীর দক্ষিণ বাগবাড়ি শাহজালাল আবাসিক এলাকায় সাবেক চেয়ারম্যান ও বিএনপি নেতার বাড়ি ভাঙচুর ও লুটপাট করার অভিযোগ উঠেছে। আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মিসবাহ উদ্দিন সিরাজের ঘনিষ্ঠজন হিসেবে পরিচিত আব্দুল মতিন ও সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক জাকির এর বন্ধু হারুন মিয়ার নেতৃত্বে ভাঙচুর লুটপাট ও হামলা চালানো হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন কচির মঞ্জিল ১০নং বাসার মালিক ও বাসিন্দা মৃত কচির মামন্দের ছেলে সাবেক চেয়ারম্যান চুনু মিয়া।
বিশ্বনাথ উপজেলার দশঘর ইউপি’র সাবেক চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি মো. চুনু মিয়া আরও জানান, গত ২৬ মে ভোরে আওয়ামী লীগ নেতা মতিন, হারুন স্থানীয় বিএনপি’র কতিপয় নেতা ও লোকজন মিলে তার বাসার সিসি ক্যামেরা ভেঙে এবং কেসি গেইট ভাঙচুর করে দুতলায় গিয়ে ঘরের দরজা ভেঙে প্রবেশ করে মূল্যবান জিনিসপত্র ভাঙচুর করে স্বর্নালংঙ্কার, কোরবানির গরু কিনার নগদ টাকা ও মূল্যবান জিনিসপত্র লুটপাট করেছে। যার ভিডিও ফুটেজ সংরক্ষিত রয়েছে।
তিনি এ ব্যাপারে গত বৃহস্পতিবার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ১নং আমলি আদালতে সিনিয়র আইনজীবী মোহাম্মদ লালার মাধ্যমে মামলা দায়ের করেছেন। আদালত মামলাটি গ্রহণ করে তদন্তপূর্বক প্রতিবেদন দাখিলের জন্য কোতোয়ালী মডেল থানার অফিসার ইনচার্জকে নির্দেশ দিয়েছেন। এছাড়াও চুনু মিয়া এ ঘটনায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সিলেট ক্যাম্প, সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার, উপ-পুলিশ কমিশনার (দক্ষিণ) বরাবরে লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন। মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, চুনু মিয়ার দস্তখত জাল করে হারুন মিয়া জাল দানপত্র সৃষ্টি করায় তার বিরুদ্ধে সি.আর ৬৫০/২৩ ইং মামলা দ.বি. ৪১৯/৪২০/৪৬৭/৪৬৮/৪৭১ ধারায় মামলা দায়ের করেন চুনু মিয়া। যাতে সমন হওয়ায় আসামি বিজ্ঞ আদালত হতে জামিনে মুক্তি লাভ করে। গত ২৬ মে হারুন, মতিন মিলে ২৫/৩০ জন দুবৃর্ত্ত দা, কুড়াল, রড, বন্দুক ইত্যাদি নিয়ে বাসার আক্রমণ করে বাসার সামনে গেইট ভাঙ্গিয়া চুরমার করে ও কেসি গেইটের তালা ভাঙ্গিয়া শক্তির মহড়া ও তান্ডবপূর্বক বাসায় অনধিকার প্রবেশ করে দরজা ভাঙ্গিয়া শয়ন কক্ষে ঢুকে আলমিরা ভাঙচুর করে তান্ডব সৃষ্টি কোরবানীর গরু খরিদের জন্য রক্ষিত সাতলক্ষ টাকা ও মূল্যবান জিনিসপত্র এবং আলমিরা হতে নগদ একলক্ষ টাকা ও মুল্যবান দলিলাদি পুবালী ব্যাংক ও ন্যাশনাল ব্যাংকের ২টি চেকবই, ২টি ভিসা কার্ড, ৫টি এন.আই.ডি কার্ড ২টি ড্রাইভিং লাইসেন্স ছিনাইয়া নেয়। এছাড়া ব্যবহৃত মোবাইল নং ০১৭১১-৯৫৫১৭২ ও পুত্রবধু সোনিয়ার কক্ষে প্রবেশ করে স্ত্রী ও পুত্রবধুকে ভীত সন্ত্রস্ত্র করে তান্ডব চালাইয়া পঞ্চাশ হাজার টাকা ও ১২ ভরি স্বর্ণালংকার ছিনাইয়া নেয়। তখন চুনু মিয়ার স্ত্রীর সামসাং মোবাইল ও পুত্রবধূগংদের ২টি মোবাইল এবং টেলিভিশন, ২টি টেপ, ১টি আইফোন, টর্চ লাইট, সি.সি ক্যামেরার মনিটর, রাউটার এবং মানিবেগ থেকে নগদ ৫০০০/- টাকা ছিনাইয়া নেয় এবং তান্ডব চালাইয়া কয়েক লক্ষাধিক টাকা জিনিসপত্র লুঠপাট করে সি.সি ক্যামেরা ওয়াইফাই রাউটার ভাঙ্গিয়া এবং বাসার মালামাল ইত্যাদি ভাঙ্গিয়া এক অরাজকত পরিস্থিতির সৃষ্টি করে। সন্ত্রাসীরা চলে যাওয়ার পর স্থানীয়রা ৯৯৯ ফোন করেন। পরে পুলিশ এলে সমস্ত ঘটনা দেখান ও অবগত করেন।
চুনু মিয়া জানান, হারুন মিয়া লুটপাট করাকালিন বাসার সামনের নামফলক ভাঙচুর করেন। অথচ ২০০৯ সালে চুনু মিয়া ও তার ভাইয়ের নামে নামজারি হয় ৯ শতক ভূমি। যা বর্তমানে ৪:৯৬ শতক আছে। এর উপর বাসা এবং দোকান ৪ টা রয়েছে। চুনু মিয়া ও তার ছেলেদের অর্থ এবং বাবার পৈত্তিক সম্পত্তি বিক্রির ২০ লক্ষ টাকা দিয়ে বাসা নির্মাণ করেন। দোকানের ব্যবসায়ীদের সাথে ডিড অনুযায়ী হাই কোর্টের আদেশ বলে ভাড়া নিচ্ছেন চুনু মিয়া।
স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গত ২৬ মে ভোরে প্রথমে অস্ত্রধারী ৫/৬ জন যুবক এসে একটি বাশ দিয়ে সিসি ক্যামেরা ভাঙচুর করে। পরবর্তীতে স্থানীয় কয়েকজন বিএনপি নামধারী সন্ত্রাসী বাসার গেইট ভেঙ্গে প্রবেশ করে ভাঙচুর ও লুটপাট চালায়। সিসি ক্যামেরা ভাঙ্গার পূর্বের ফুটেজ দেখলে সব পাওয়া যাবে।
সিলেট জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক দুইবারের সভাপতি ও সিনিয়র আইনজীবী মোহাম্মদ লালা জানান, গত ২৬ জুন চুনু মিয়ার বাসা ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনায় আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে। আদালত মামলাটি গ্রহণ করে তদন্তপূর্বক প্রতিবেদন দাখিলের জন্য কোতোয়ালী মডেল থানা পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছেন। কোতোয়ালী মডেল থানার সেকেন্ড অফিসার এসআই আলিম উদ্দিন জানান, গত ২৬ জুন জরুরি নাম্বারে ফোন পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায় এবং দুইজনকে থানায় নিয়ে আসে। পরবর্তীতে স্থানীয়দের কে নিয়ে আপোষের জন্য বিষয়টি নিষ্পত্তির কথা বলা হয়েছে।