বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে বিদেশি কূটনীতিকদের অযাচিত মন্তব্য না করার আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেন, ‘এত বড় বড় কথা বলেন দূতাবাসের রাষ্ট্রদূত! বন্ধুত্বটা নষ্ট করবেন না। আমরা বন্ধুত্ব চাই। অতীতে ‘৭৫, ‘৭১-এর মতো অনেক বেদনা আছে। তারপরও আমরা বন্ধুত্ব চাই। এভাবে করলে বন্ধুত্বে ফাটল ধরবে। সেটায় কারও লাভ নাই।’
ওবায়দুল কাদের আজ শুক্রবার ধানমন্ডিস্থ আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের ২২তম জাতীয় সম্মেলনের অভ্যর্থনা উপ-কমিটির প্রস্তুতি সভায় এসব কথা বলেন।
আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক বলেন, ৬ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের চেহারা, গণতন্ত্রের অবস্থা আমরা দেখেছি। তাদের নির্বাচন একপক্ষ মেনে নেয়নি, রেজাল্ট মেনে নেয়নি। ফলস প্র্যাকটিস নাকি হয়েছে। নির্বাচনি জালিয়াতি বাংলাদেশে শুধু বলা হয় না, এসব শব্দ আমেরিকাতেও ব্যবহার হচ্ছে। সে সময় পাঁচ জন মানুষ মারা গেছে। কংগ্রেস আক্রান্ত হয়। ন্যান্সি পেলোসি কীভাবে লুকিয়ে ছিল সেই দৃশ্য আমরা দেখেছি।
তিনি বলেন, অহেতুক কেন এসব কথা বলছেন? ডেইলি ম্যাস শুট (নির্বিচারে গুলি) হচ্ছে, সপ্তাহে অন্তত দুইটা। একেকটাতে পাঁচ জন, ১০ জন মারা যায়। ১৯টি শিশু একটা ম্যাস শুটে মারা গেছে। আপনারা মানবাধিকারের কথা বলেন। আর পুলিশকে সেখানে ধরা হয়েছে। তারা যথাসময়ে সিকিউরিটি দেয়নি। দিলে এই ঘটনা ঘটতো না। সিকিউরিটি অনুপস্থিত। আমাদের আদালতপাড়া নিয়ে কথা বলেন। আপনাদের ওখানে কী হচ্ছে? সবাই নিজের চেহারাটা আগে দেখুক।
আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলন নিয়ে দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, একই ব্যক্তির সব কমিটিতে নাম লেখবেন না। সেটা করবেন না। অনেকে দুর্দিনে দলের খোঁজ-খবর নেয়নি, সম্মেলনে উজানের কই মাছ হয়। মৌসুম চলে গেলে বসন্তের কোকিলও চলে যায়। এমন যারা আছেন, দয়া করে মাফ করে দেবেন। আওয়ামী লীগে লোকের অভাব নেই। বসন্তের কোকিল দরকার নেই। কাজের লোক দরকার, আমরা কাজের লোক চাই।
সম্মেলনে বিদেশের কাউকে আমন্ত্রণ জানানো হচ্ছে না জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, বিদেশি মিশনের কর্মকর্তাদের, ডিপ্লোম্যাটদের আমরা দাওয়াত দেবো। যেমন, বিশ্বব্যাংক সহ যাদের প্রতিনিধি আছে তাদেরও আমন্ত্রণ করতে হবে। সম্মানের সঙ্গে গিয়ে তাদের দাওয়াত কার্ড পৌঁছে দেয়া হবে। তাদের জন্য সম্মেলনে আসনের ব্যবস্থাও করতে হবে। কে আসবে এটা কনফার্ম করতে হবে। আন্দাজে আমরা সব দূতাবাসের জন্য আসন রাখলাম, আসলো না খালি পড়ে থাকলো। এটা কিন্তু কনফার্ম করতে হবে, কারা কারা আসবে।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিমের সভাপতিত্বে সভায় উপস্থিত ছিলেন আন্তর্জাতিক উপ-কমিটির চেয়ারম্যান ড. জমির, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, আন্তর্জাতিক সম্পাদক ড. শাম্মী আহমেদ, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক প্রমুখ।
শেখ ফজলুল করিম সেলিম বলেন, কূটনীতিকরা একটা সাইডে মোটিভেটেড হয়ে আছে। ঘটনা ঘটার আগেই তারা একটা বিবৃতি দেয়।
তিনি বলেন, আমি দেখেছি, পুলিশের রক্ত ঝড়ছে, টেলিভিশনেই দেখা গেছে। সেটার বিষয়ে তাদের কোনো বক্তব্য নেই। তাদের বক্তব্য এমনভাবে আসছে যে আওয়ামী লীগ গণতন্ত্রকে ধ্বংস করে দিচ্ছে।
নির্বাচন সংবিধান অনুসারে হবে উল্লেখ করে শেখ সেলিম বলেন, সংবিধানের বাইরে নির্বাচন হবে না। এখন তারা একটা কথা বলে, এখানে বসে যাবে, ওখানে বসে যাবে, অমুককে টেনে নামাবে, এসব কথার ভেতর আমরা থাকব না। আমরা আমাদের সম্মেলনকে গুরুত্ব দেবো।
ঢাকা, ৯ ডিসেম্বর, ২০২২ (বাসস)