শাল্লার খবর ডেস্ক ::: সিলেটে বন্যা পরিস্থিতির আরও উন্নতি হয়েছে। গত ২৪ ঘন্টায় বৃষ্টি না হওয়ায় রোববার পানি আরও কমেছে। এ অবস্থা্য় শর্তসাপেক্ষে খুলে দেওয়া হচ্ছে পর্যটন কেন্দ্রগুলো। রোববার গোয়ানঘাট উপজেলার জাফলং ও রাতারগুল পর্যটন কেন্দ্র খুলে দেয়া হয়।
সিলেট জেলা প্রশাসন থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, রোববার পর্যন্ত সিলেটে পানিবন্দি অবস্থায় আছেন ৮ লাখ ৫২ হাজার ৩৫৭ জন। এরমধ্যে আশ্রয় কেন্দ্রে আছেন ১৯ হাজার ৭৩৮ জন। তবে পানি কমায় গত ২৪ ঘন্টায় আশ্রয়কেন্দ্র ছেড়ে চলে গেছেন প্রায় দুই হাজার লোক।
তবে পানি কমলেও বন্যা আক্রান্তদের দুর্ভোগ কমেনি। বরং পানি নামার সাথেসাথে স্পষ্ট হয়ে উঠছে বন্যার ক্ষত। বন্যয়ে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে সড়কের। জেলার বেশিরভাগ সড়কই ভেঙে গেছে। ভেঙে গেছে জলমগ্ন হওয়া কাচা বাড়িঘর। ফসলেরও ক্ষতি হয়েছে ব্যাপক। তবে এখনও পানি পুরোপুরি না নামায় ক্ষয়ক্ষতি নিরুপন করতে পারেনি সংশ্লিস্ট বিভাগগুলো।
পানি নেমে যাওয়ায় শনিবার আশ্রয় কেন্দ্র থেকে বাড়ি ফিরেন জৈন্তাপুর উপজেলার চিকনাগুল এলাকার দিনমজুর কবির আহমদ। তিনি বলেন, এতোদিন তবু আশ্রয়কেন্দ্রে ছিলাম। মাথাগোঁজার ঠাঁই ছিলো। কিছু একটা খাবারও মিলতো। কিন্তু এখন বাড়ি ফিরে আরও বিপদে পড়েছি।
তিনি বলেন, পানিতে পুরো ঘর ভেঙে গেছে। ঘরে কিছু জমানো ধান ছিলো। সেগুলোও পানিতে ভেসে গেছে। এখন থাকবো কোথায় আর খাবো কি?
খুলে দেওয়া হলো জাফলং ও রাতারগুল
পর্যটক নিরাপত্তায় পর্যাপ্ত প্রস্তুতি সম্পন্ন এবং আবহাওয়া স্বাভাবিক থাকা সাপেক্ষে সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার জাফলং ও রাতারগুর পর্যটনকেন্দ্র খুলে দেওয়া হয়েছে।
রোববার উপজেলা পর্যটন কমিটি জাফলং পর্যটনকেন্দ্রগুলো চালু করার সিদ্ধান্ত নেয়। এর আগে গত শুক্র ও শনিবার দুই দফা গোয়াইনঘাটের সহকারী কমিশনার (ভুমি)সাইদুল ইসলামের নেতৃত্বে উপজেলা প্রশাসনের একটি টিম পর্যটনকেন্দ্রগুলো পরিদর্শন করে।
তবে জাফলং পর্যটনকেন্দ্রে নৌ-চলাচলের রুটে যাত্রীদের নিরাপত্তা ঝুঁকি বিবেচনায় সকল বোট মালিক, নৌ চালক-মাঝিদেরকে যাত্রীদের জন্য পর্যাপ্ত লাইফ জ্যাকেটের ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে।
জাফলংয়ে পিয়াইন নদীর পানির গভীরতা ও স্রোত বিবেচনাহ সাঁতার জানে না এবং ১২ বছরের কম বয়সীদের নিয়ে জাফলং ট্যুরিস্ট স্পটে নৌকায় চলাচল করা যাবে না। ট্যুরিস্ট পুলিশকে পর্যটনকেন্দ্রে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ও সুরক্ষা বিধানের জন্য বলা হয়েছে।
গোয়াইনঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. তৌহিদুল ইসলাম বলেন, ‘উপজেলার পর্যটনকেন্দ্রগুলো শর্তসাপেক্ষে রোববার দুপুর থেকে খুলে দেওয়া হয়েছে। তবে পর্যটনকেন্দ্রে পর্যটক, ট্যুর অপারেটর ও নৌকার মাঝিসহ সকলকে অবশ্যই নির্দেশনা মেনে চলতে হবে।’
প্রসঙ্গত, বন্যা দেখা দেওয়া গত ১৭ জুন সিলেটের পর্যটনকেন্দ্রগুলো বন্ধ করে দেয় প্রশাসন।