• ২০শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ৫ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ১৮ই জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

হাওরে শ্রমিক সংকট নিরসনে সুনামগঞ্জের বালু মহালগুলো বন্ধের দাবি

Dainik Shallar Khabor.com
প্রকাশিত এপ্রিল ১৮, ২০২৩
হাওরে শ্রমিক সংকট নিরসনে সুনামগঞ্জের বালু মহালগুলো বন্ধের দাবি

 শাল্লার খবর ডেস্ক ::: চলতি বোরো মৌসুমে হাওরে শ্রমিক সংকট নিরসনে পর্যাপ্ত হারভেস্টার মেশিন বরাদ্দ এবং ফাজিলপুর, যাদুকাটা বালুমহাল বন্ধের দাবিতে জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছে হাওর বাঁচাও আন্দোলন সুনামগঞ্জ জেলা কমিটি।

মঙ্গলবার (১৮ এপ্রিল) দুপুরে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে জেলা প্রশাসক দিদারে আলম মোহাম্মদ মাকসুদ চৌধুরী’র পক্ষে স্মারকলিপিটি গ্রহণ করেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) শেখ মহি উদ্দিন। এসময় উপস্থিত ছিলেন, হাওর বাঁচাও আন্দোলন কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক বিজন সেন রায়, হাওর বাঁচাও আন্দোলন সুনামগঞ্জ জেলা কমিটির সভাপতি ইয়াকুব বখত বাহলুল, সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল হক মিলন, সদর উপজেলা কমিটির সভাপতি স্বপন কুমার দাস, সাধারণ সদস্য অরুণ চন্দ্র দে, রবীন্দ্র চন্দ্র দে, শাল্লা উপজেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক জয়ন্ত সেন, সাংগঠনিক সম্পাদক সন্দীপন তালুকদার প্রমুখ।

স্মারকলিপিতে বলা হয়, ২০১৭ সালের পর থেকে সুনামগঞ্জের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ ও কৃষকদের নিয়ে গঠিত হাওর বাঁচাও আন্দোলন সুনামগঞ্জ কমিটি কৃষকের একমাত্র ফসল রক্ষা এবং কৃষকের দাবি আদায়ে সক্রিয় রয়েছে। পাশাপাশি বিভিন্ন আন্দোলন কর্মসূচি পালন ও দাবি আদায়ের মাধ্যমে সরকারের গৃহীত উদ্যোগ বাস্তবায়নে সহযোগিতা করে আসছে। অরাজনৈতিক এই সংগঠনটি বীর মুক্তিযোদ্ধা, শিক্ষাবিদ, সাংবাদিক, আইনজীবী, সংস্কৃতিকর্মী ও হাওরের কৃষকসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার সচেতন মানুষের অংশগ্রহণে স্বেচ্ছাশ্রমে পরিচালিত হয়ে আসছে।

বলা হয়, এবারের বোরো মৌসুমে সুনামগঞ্জের ১২ উপজেলায় প্রায় ২৩ লাখ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে। প্রাকৃতিক পরিবেশ ভালো থাকায় ও সরকারের গৃহীত নানামুখী উদ্যোগের কারণে অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে এবার উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা বাড়ার আশাবাদী আমরা। ইতোমধ্যে অনেক হাওরে আগাম জাতের ধান কাটতে শুরু করেছেন। সংশ্লিষ্ট হাওরের কৃষকরা। আমাদের সংগঠনের প্রতিনিধিদের সরেজমিন তথ্য অনুযায়ী জানতে পেরেছি যে, অনেক হাওরের ধান পাকতে শুরু করলেও শ্রমিকের অভাবে ধান কাটতে পারছেন না কৃষকরা। সরকার থেকে হারভেস্টার মেশিন বরাদ্দ দিলেও তা পর্যাপ্ত নয়।

তাছাড়া ধানকাটা, মাড়াই, সংগ্রহ ও বিপণনকাজে শ্রমিক সংকটে রয়েছেন বলে জানিয়েছেন হাওরের কৃষকরা। অন্যান্য সময়ে হাওরের বিরূপ অভিজ্ঞতার কারণে এ বছর জেলার বাহিরের অঞ্চল থেকে এখনো শ্রমিকরা আসেননি। ফলে শ্রমিক সংকট আরও তীব্র হয়ে পড়তে পারে বলে আমরা মনে করি। আমাদের সংগঠনের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী জেলার ফসল রক্ষা বাঁধের কাজের মান ও স্থায়িত্বের দিক দিয়ে ৭০-৭৫ ভাগ সম্পন্ন হয়েছে। অনেক বাঁধ মাটির পরিবর্তে বালি দিয়ে তৈরি হয়েছে। এছাড়া অনেক গুরুত্বপূর্ণ ক্লোজারের কাজ দুর্বল হয়েছে। আমরা আশঙ্কা করছি নদীতে পানি আসলে এসব দুর্বল ও বালির বাঁধ ভেঙে হাওরে পানি প্রবেশ করে বোরো ফসল তলিয়ে যেতে পারে।

স্মারকলিপিতে আরও বলা হয়, সুনামগঞ্জের তাহিরপুরের ফাজিলপুর, যাদুকাটা বালি মহালে প্রায় ৩০ হাজার শ্রমিক প্রতিদিন কাজ করে থাকেন। পূর্বের সময়ে বৈশাখ মাসে কৃষকের ফসল ঘরে তুলতে শ্রমিক সংকট নিরসনে প্রশাসনের পক্ষ থেকে বালুমহাল আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা দিয়ে বন্ধ করা হতো, যাতে বালুমহালে কর্মরত শ্রমিকরা হাওরের কৃষকদের ফসল তুলতে সাময়িক শ্রম প্রদান করতে পারেন। তাই আমাদের দাবি শ্রমিক সংকট নিরসনে এই বালুমহালগুলো বন্ধ করে জরুরী নির্দেশনা দিয়ে তাদের মাঠে ধান কাটার নির্দেশনা দেয় হোক।

এ সময় তিনটি দাবি জানায় হাওর বাঁচাও আন্দোলন তাদের মধ্যে সরকারিভাবে কৃষকদের মাঝে পর্যাপ্ত হারভেস্টার মেশিন বরাদ্দ দেয়া, হাওরের বোরো ফসল ঘরে তোলার আগ পর্যন্ত ফাজিলপুর, যাদুকাটা বালি মহাল বন্ধ ঘোষণা দেয়া এবং অকাল বন্যার আগে পাকাধান কাটতে জরুর ভিত্তিতে নির্দেশনা প্রদান করা।