• ২১শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ১৯শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

‘ম্যাগনেটিক পিলার ভেবে’ ঘরে রকেট লঞ্চার সংরক্ষণ

Dainik Shallar Khabor.com
প্রকাশিত ফেব্রুয়ারি ২২, ২০২৩
‘ম্যাগনেটিক পিলার ভেবে’ ঘরে রকেট লঞ্চার সংরক্ষণ

সংবাদ সম্মেলনে আলী হোসেনকে
নিরপরাধ উল্লেখ করে মুক্তির দাবি স্ত্রীর

সীমান্ত এলাকা থেকে ব্রিটিশ শাসনামলের ম্যাগনেটিক পিলার খুঁজে বের করতে পারলে বিক্রি করা যাবে শত কোটি টাকায়। এমন গল্প শুনিয়ে সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলার রণকেলী দীঘিরপার গ্রামের শেখ সালেহ আহমদের ছেলে আলী হোসেনের সাথে সম্পর্ক তৈরি করে একটি প্রতারক চক্র। ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী আলী হোসেন তাদের সাথে সপ্তাহে ৩/৪ দিন সীমান্ত এলাকায় পিলার খুঁজতে বের হতেন। এ জন্য ওই চক্রের লোকেরা তাকে দৈনিক ১ হাজার টাকা করে দিত। পিলারটি নিয়ে আলী হোসেনের আগ্রহ তৈরি হলে তারা তাকে ম্যাগনেটিক পিলারের নমুনা হিসেবে প্লাস্টিকের একটি জিনিস দেয়। নমুনা পেয়ে নিজেও ম্যাগনেটিক পিলারের খোঁজে নামেন আলী হোসেন। এরই মাঝে তার এক আত্মীয় নদীতে মাছ ধরতে গিয়ে একটি ধাতব বস্তু খুঁজে পায়, যা দেখতে ওই প্রতারক চক্রের দেওয়া নমুনার মতো। আলী হোসেন শত কোটি টাকার স্বপ্নে বিভোর হয়ে ওই বস্তুটি কিছু টাকা দিয়ে নিজের কাচে নিয়ে নেন। আলী হোসেন ম্যাগনেটিক পিলার হিসেবে ভেবে ওটাকে খুবই যতেœর সাথে আগলে রাখেন। তবে ওই বস্তুটি ম্যাগনেটিক পিলার ছিলো না ওটা ছিলো বিধ্বংসী রকেট লঞ্চার। ঘরে বিধ্বংসী রকেট লঞ্চার রাখার দায়ে সম্প্রতি র‌্যাব গ্রেপ্তার করে আলী হোসেনকে। এখন কারাগারে দিন কাটছে আলী হোসেনের।
গতকাল বুধবার (২২ ফেব্রুয়ারি) সিলেট জেলা প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে আলী হোসেনের স্ত্রী রেহানা বেগমের ভাষ্য এমনই।
সংবাদ সম্মেলনে রেহানা বেগম দাবি করেন তার স্বামী নির্দোষ ও নিরপরাধ। রেহানা বেগম বলেন, যখন তিনি প্লাস্টিকের নমুনা পেয়েছিলেন তখন থেকেই তিনি জিনিসটিকে যতেœ রেখেছিলেন। ম্যাগনেটিক পিলার সম্পর্কে তার কোনো ধারণাই ছিলো না। রকেট লঞ্চার পাওয়ার পর ঘরে থাকা নমুনার সাথে মিলে যাওয়ায় তিনি ওটাকে ম্যাগনেটিক পিলারই ভেবেছিলেন। এর মধ্যে একদিন দুজন লোক এসে এটি দরদামও করে। তারা এর জন্য পাঁচ লাখ টাকা দিতে চায়। তখন আমার স্বামীর ধারণা আরও দৃঢ় হয় যে এটা ম্যাগনেটিক পিলারই। তিনি জিনিসটির দাম চান পাঁচ কোটি টাকা।
সংবাদ সম্মেলনে রেহানা বেগম বলেন, স্বামীসহ তার পরিবারের সকলেই বিশ্বাস করেছিলেন তারা ঘরে যে জিনিসটি রেখেছিলেন সেটা ম্যাগনেটিক পিলারই ছিলো। যদি জানতেন তাহলে তারা জিনিসটি কোনোভাবেই ঘরে রাখতেন না। রেহানা বেগমের প্রশ্ন-ঘরে বৃদ্ধ বাবা-মা রয়েছেন, শিশু সন্তান রয়েছে এমন অবস্থায় কি করে তিনি জেনেশুনে ঘরে একটি বিধ্বংসী জিনিস রাখবেন। ওই জিনিসটির বিস্ফোরণ হলে তো ঘরের লোকদেরই বিপদ হওয়ার কথা।
রেহানা বেগম জানান, পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি তার স্বামী আলী হোসেন কারাগারে থাকায় তাদের দিনাতিপাত করাই রীতিমতো দুঃসাধ্যই হয়ে পড়েছে। শ্বশুরের চিকিৎসা, সন্তানদের পড়ালেখা কোনো কিছুই চালানো সম্ভব হচ্ছে না। তিনি সঠিক তদন্তের মাধ্যমে তার স্বামীর মুক্তির ব্যবস্থার জন্য সংশ্লিষ্টদের পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সুদৃষ্টি কামনা করেন।
সংবাদ সম্মেলনে আলী হোসেনের বৃদ্ধা মা রাজিয়া বেগম ও আলী হোসেন- রেহানা দম্পতির তিন সন্তানও উপস্থিত ছিলেন। প্রেস-বিজ্ঞপ্তি